জুমাতুল বিদায় সারা দেশে মুসল্লির ঢল
২৯ মার্চ ২০২৫, ১২:২৭ এএম | আপডেট: ২৯ মার্চ ২০২৫, ১২:২৭ এএম

পবিত্র জুমাতুল বিদায় উপলক্ষে বায়তুল মোকাররম জাতীয় মসজিদসহ সারা দেশের মুসজিদগুলোতে সর্বস্তরের মুসল্লিদের ঢল নেমেছিল। সকাল ১০টা থেকেই বিভিন্ন অঞ্চল থেকে মুসল্লিগণ জায়নামাজ নিয়ে মাহে রমজানের শেষ জুমাতুল বিদায় অংশ নিতে বায়তুল মোকাররম জাতীয় মসজিদের প্রবেশ করতে থাকেন। বায়তুল মোকাররম জাতীয় মসজিদের উত্তর গেইটে কড়া পুলিশী প্রহরা বসানো হয়। সকাল ১১টার পর মুসল্লিদের চাপ বাড়তে থাকলে বায়তুল মোকাররম জাতীয় মসজিদের ভেতর ভরে যায়। পরে পূর্ব সাহান এবং মসজিদের সাত তলা পর্যন্ত মুসল্লিদের তিল ধরার ঠাঁই ছিল না।
মাহাত্ম্য ও তাৎপর্যপূর্ণ এই দিনে জুমার নামাজের পর বিভিন্ন মসজিদে ইমাম-খতিবগণ দেশ-জাতি এবং মুসলিম উম্মাহর ঐক্য ও শান্তি কামনা করে বিশেষ দোয়া-মোনাজাত করেন। এসময়ে মহান আল্লাহর ক্ষমা ও নৈকট্য লাভে মুসল্লিদের মাঝে কান্নার রোল পড়ে যায়। আজকের দিনের মাধ্যমে (জুমাতুল বিদা) কার্যত বিদায় জানানো হয়েছে পবিত্র মাহে রমজানকে। রাজধানীর মহাখালিস্থ মসজিদে গাউছুল আজমেও জুমাতুল বিদা উপলক্ষে মুসল্লিদের উপচে পড়া ভিড় পরিলক্ষীত হয়। মসজিদে স্থান সঙ্কুলন না হওয়ায় বাহিরে রাস্তার ওপর মুসল্লিদের জুমার নামাজ আদায় করতে হয়েছে। শুক্রবার সরেজমিন ঘুরে দেখা যায়, জুমাতুল বিদা কেন্দ্র করে মসজিদগুলোতে মুসল্লিদের ঢল নেমেছে। উপচেপড়া ভিড়ের কারণে আজানের আগেই লোকে লোকারণ্য হয়ে যায় অধিকাংশ মসজিদ। এমনকি মসজিদে জায়গা না পেয়ে বাইরের সড়ক পর্যন্ত মানুষের উপস্থিতি ছড়িয়ে পড়ে। রাস্তার ওপর কাগজ, জায়নামাজ, মাদুর বিছিয়ে জুমার নামাজ আদায় করেন মুল্লিগণ।
রাজধানীর জাতীয় মসজিদ বায়তুল মোকাররমেও জুমাতুল বিদা উপলক্ষ্যে নামাজের পর খতিব মুফতি আব্দুল মালেক দেশ, জাতির শান্তি, কল্যাণ, ফিলিস্থিনিদের মুক্তি এবং মুসলিম উম্মাহর উন্নতি সমৃদ্ধি কামনা করে বিশেষ মোনাজাত করেন। এ সময় মুসল্লিদের আমিন-আমিন ধ্বনিতে মুখরিত হয়ে যায় পুরো মসজিদ। কান্নায় ভেঙে পড়েন অনেক মুসল্লি। উল্লেখ্য, রমজান মাসের শেষ জুমার দিন মুসলিম বিশ্বে ‘জুমাতুল বিদা’ হিসেবে পালন করা হয়। প্রতিবারের মতো এবারও বাংলাদেশে ধর্মীয় ভাবগাম্ভীর্যের মধ্য দিয়ে এই বিশেষ দিন পালিত হলো। জুমার নামাজ এবং বড় জমায়েত কেন্দ্র করে জাতীয় মসজিদ বায়তুল মোকাররম এবং আশপাশের এলাকার নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করা হয়েছে। নিরাপত্তা নিশ্চিতে মসজিদে আগত মুসল্লিদের মধ্যে যারা সাথে ব্যাগ নিয়ে ভেতরে প্রবেশ করছেন তাদের তল্লাশি করা হয়। একইসাথে মসজিদের সবগুলো গেট এবং তার সামনের সড়কের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ স্থানে পুলিশসহ অন্যান্য বাহিনীর সদস্যদের সতর্ক অবস্থান দেখা গেছে।
চট্টগ্রাম ব্যুরো জানায়, রহমত, মাগফিরাত ও নাজাতের মাস পবিত্র মাহে রমজানের গতকাল শুক্রবার আখেরি জুমা তথা জুমাতুল বিদায় নগরীর মসজিদগুলোতে মুসল্লির ঢল নামে। জুমার আজানের আগেই মসজিদমুখী হন নগরবাসী। আজানের পর মসজিদগুলোতে তিলধারণের ঠাঁই ছিল না। প্রায় প্রতিটি মসজিদে নামাজে মুসল্লির কাতার মসজিদ ছাড়িয়ে আশপাশের সড়ক পর্যন্ত ছাড়িয়ে যায়। কয়েকটি এলাকায় জুমার নামাজ চলাকালে সড়কে যানবাহন চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। তপ্ত রোদ উপেক্ষা করে অনেক মুসল্লি পিচঢালা সড়কে নামাজের জন্য কাতারবন্দি হন। সব শ্রেণি পেশা ও বয়সের মানুষ এক কাতারে সামিল হয়ে পবিত্র জুমার নামাজ আদায় করেন।
গতকালের জুমার খুতবায় ইমাম ও খতিবগণ যাকাতের তাৎপর্য ও বিধান নিয়ে আলোচনা করেন। নিয়ম অনুযায়ী যাকাত ও সাদকাতুল ফিতর আদায় করার তাগিদ দিয়েছেন তারা। যাকাত আদায় না হলে আল্লাহর পক্ষ থেকে কঠোর সাজার হুশিয়ারিও বর্ণনা করেন তারা। ইমামগণ যাকাত ভিত্তিক অর্থনীতির উপর গুরুত্বারোপ করেন। তারা বলেন, যাকাত আদায় এবং তার প্রাপ্যদের মাঝে বণ্টন করার মূলত রাষ্ট্রের দায়িত্ব। কিন্তু দেশে কল্যাণ রাষ্ট্র না হওয়ায় তা হচ্ছে না। নামাজ শেষে ইমাম ও খতিবগণ দেশ, জাতি ও মুসলিম উম্মাহর সমৃদ্ধি কামনা করে বিশেষ দোয়া মোনাজাত করেন। নগরীর ঐতিহাসিক আন্দরকিল্লা শাহী জামে মসজিদ, জমিয়তুল ফালাহ মসজিদ, লালদীঘি জামে মসজিদ, শাহ আমানত খান দরগাহ মসজিদ, অলিখাঁ জামে মসজিদ, মিসকিন শাহ মসজিদ, বায়েজিদ বোস্তামি দরগা জামে মসজিদ, এনায়েত বাজার শাহী জামে মসজিদ, ধনিয়ালাপাড়ার বায়তুশ শরফ জামে মসজিদ, পাঠানটুলি চট্টেশ্বরাই গায়েবি মসজিদ, ফিরিঙ্গি বাজার জামে মসজিদ, মুরাদপুর মসজিদে বেলাল, বহদ্দারহাট জামে মসজিদ, মেহেদিবাগ সিডিএ আবাসিক এলাকা জামে মসজিদ, কাজির দেউড়ি জামে মসজিদ, চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ কেন্দ্রীয় জামে মসজিদ, এম এ আজিজ স্টেডিয়াম সংলগ্ন জামে মসজিদ, সিআরবি জামে মসজিদ, চান্দগাঁও আবাসিক এলাকা জামে মসজিদ, সিজিএস কলোনী জামে মসজিদ, বন্দরটিলা আলী শাহ জামে মসজিদসহ নগরীর বেশিরভাগ মসজিদে ছিল মুসল্লির উপচেপড়া ভিড়।
স্টাফ রিপোর্টার, নারায়ণগঞ্জ থেকে জানান : কাতারে কাতারে দাঁড়িয়েছেন মুসল্লিরা, মিলিয়েছেন কাধে কাধ। মসজিদ ও বারান্দা ছেড়ে নামাজের পাটি পৌঁছে গেছে সড়ক পর্যন্ত। চৈত্র মাসের রোদ উপেক্ষা করেও মুসল্লিরা বসে আছেন দেশ ও জাতির শান্তি কামনায় অংশ নিবেন বলে। রমজান মাসের শেষ শুক্রবারে ‘জুমাতুল বিদা’য় নগরীর মসজিদগুলোতে নেমেছে ধর্মপ্রাণ মুসল্লিদের ঢল। নির্ধারিত সময়ের আগেই পরিপূর্ণ হয়েছে পুরো মসজিদ। খুতবার আগে নফল নামাজ, তসবি পাঠ, দুয়া এবং কোরআন তেলাওয়াত করে সময় পার করেছেন মুসল্লিরা।
গতকাল শুক্রবার দুপুরে সরেজমিনে নগরীর খানপুর, চাষাঢ়া, কালিরবাজার, ডিআইটিসহ আশেপাশের বিভিন্ন এলাকার মসজিদগুলোতে দেখা যায় এমন চিত্র। বেলা ১২টার আগ থেকেই দলে দলে মসজিদের ভেতরে প্রবেশ করছেন বিভিন্ন বয়সের মুসল্লিরা। ভেতরে স্থান সংকুলান না হওয়ায় মুসল্লিরা দ্বিতীয়-তৃতীয় তলায়, বারান্দায় এবং প্রধান সড়কে পাটি বিছিয়ে অবস্থান নেন।
বিভাগ : জাতীয়
মন্তব্য করুন
আরও পড়ুন

ইসরাইলি অর্থমন্ত্রীর পদত্যাগ

গোদাগাড়ীতে ব্যতিক্রমধর্মী অনুষ্ঠান করে প্রশাংসায় ভাসছেন ইউএনও

মির্জাপুরে প্রতিপক্ষের হামলায় এক পরিবারের ৩ জন আহত

সুন্দরগঞ্জে ঈদ পুনর্মিলনী ও সাংস্কৃতিক উৎসব

নেতাদের সঙ্গে খালেদা জিয়া ও তারেক রহমানের শুভেচ্ছা বিনিময়

ঈদের দিনেও রক্তাক্ত পাকিস্তান, একাধিক সংঘর্ষে নিহত ৬

কেমন ছিল অটোমানদের ঈদ উৎসব?

ইবি ক্যাম্পাসে ঈদ-উল-ফিতর উদযাপিত

হাসপাতালে ঈদ কাটানো রোগীদের পাশে বিএনপি নেতৃবৃন্দ

ঈদের ২য় দিনেও চলবে ডিএনসিসির ঈদমেলা

ঈদে ভক্তদের কি বার্তা দিলেন চার খান?

খেলাধূলার কোন বিকল্প নেই : বিএনপি চেয়ারপারর্সনের উপদেষ্টা শাহজাহান মিঞা

ঝিনাইদহের শৈলকূপায় ঈদ আনন্দ র্যালি অনুষ্ঠিত

ঈদের জামাতে আসিফ কেন আলাদা কাতারে দাঁড়িয়েছিলেন, জানা গেল কারণ

ঈদুল ফিতরে ড. ইউনূসকে মোদির বার্তা

কিশোর গ্যাংয়ের হামলায় হাফেজ ফারুকের ঈদ পরিণত হল বিষাদে!

শহীদ তামীম ও শহীদ সিফাতের পরিবারের সাথে জামায়াত আমীরের সাক্ষাৎ

জাতীয় সংসদ নির্বাচনই দেশের জন্য কল্যাণ বয়ে আনতে পারে : সাবেক এমপি আবুল কালাম আজাদ সিদ্দিকী

জুলাই গণঅভ্যুত্থানে আহত পরিবারের পাশে থাকবে বিএনপি : আমিনুল হক

১৭ বছর পরে জাতীয় ঈদগাহে নামাজ আদায় করলেন সরকারপ্রধান